Wednesday, June 2, 2021

সময়ের মূল্য কতটা ?

 জীবনে সময়ের মূল্য নিয়ে রচনা পড়ে নাই এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। সময়ের মূল্য নিয়ে সচেতনতা সেখান থেকেই শুরু। সময়ের সঠিক ব্যাবহার আমাদের উন্নতির শিখরে নিয়ে যায়। এসব তত্ত্ব কথা শিখেছি কিনা বলা মুশকিল তবে মুখস্ত করে পরীক্ষায় লিখে ভাল মার্কা পেয়েছি সন্দেহ নাই। সময়ের মূল্য আমরা যেভাবে শিখি আমি সেটাতে একটু দ্বিমত পোষণ করি। এই লেখাতে আমি সেটাই কয়েকটি ঐতিহাসিক ঘটনা উল্লেখ পূর্বক আলোচনা করার চেষ্টা করব। আর সে কারণেই আলোচনাটি দীর্ঘ হতে পারে। প্রথমে বৈদ্যুতিক বাল্ব আবিষ্কারের কথা বলব। টমাস আলভা এডিসনকে বৈদ্যুতিক বাল্বের আবিষ্কারক বলা হলেও সেটা পুরোপুরি ঠিক নয়। এডিসনের আগে অন্তত ২০ জন বিজ্ঞানী বাল্ব নিয়ে গবেষণা করেন, ১৮০২ সালে হামপ্রে ড্যাভি প্রথম বিদ্যুৎ দিয়ে আলো জ্বালাতে সক্ষম হন। তার পর দীর্ঘ গবেষণা হয়। ১৮৭৯ সালে এডিসন আধুনিক বাল্ব উদ্ভাবন করেন, সেজন্যই তাঁকে বৈদ্যুতিক বাল্বের আবিষ্কারক/ জনক বলা হয়। সকল নতুন আবিষ্কারেই যিনি সফল হন তাকেই জনক বলা হয়। কথিত আছে তিনি ১০ হাজার বার ব্যার্থ হন। সত্যিকার অর্থে কেউ ব্যার্থতা গুনেগুনে গবেষণা করেন না, সম্ভবত সংখ্যাটি দিয়ে অসংখ্যবার ব্যার্থতার দিকেই ইঙ্গিত করেছেন । এই প্রসঙ্গে পরে তিনি বলেন “আমি ১০ হাজার বার ব্যর্থ হইনি, আমি বাল্বটি ভাল কাজ না করার ১০ হাজারটি কারণ বের করেছি। আচ্ছা ভাবুনতো এডিসন যদি সাড়ে ৯ হাজার বার চেষ্টা করে থেমে যেতেন আর বলতেন অযাথা সময় নষ্ট হচ্ছে, অন্য কোন কাজে মন দেই তাহলে কি আমরা আজকের বৈদ্যুতিক আলো পেতাম? হয়ত পেতাম না, পেলেও আরও অনেক পরে অন্য কারও হাত ধরে। ১৮৮০ সালের জানুয়ারিতে তিনি সারা পৃথিবীতে বিদ্যু‌ৎ ও আলো পৌঁছে দেওয়ার লক্ষে “এডিসন ইল্যুমিনেটিং কোম্পানি” প্রতিষ্ঠা করেন। পরে কোম্পানিটি “জেনারেল ইলেকট্রিক কর্পোরেশন” নামে পরিচিতি পায়। এডিসন তার আবিষ্কারে দীর্ঘ সময় ব্যায় করেছেন একই সাথে অসংখ্যবার ব্যার্থতা সামলে নিয়েছেন একটা সুন্দর ও গ্রহনযোগ্য ফলাফলের আশায়। তিনি সার্থক না হতে পারলে হয়ত আরও সময় দিতেন। এখানে প্রতীয়মান এডিসন সময়ের চেয়ে কাজের গুরুত্ব অনেক বেশি দিয়েছেন। দ্বিতীয় উদাহরণ হিসেবে উড়োজাহাজ/বিমান আবিষ্কারের দিকে দৃষ্টিপাত করব। পৌরাণিক কাহিনী বা রূপকথা থকে জানতে পারি হাজার হাজার বছর আগে থেকেই মানুষ আকাশে উড়বার বাসনা করেছে । ইতিহাসে উড়নযন্ত্রের প্রথম নকশা পাই লিওনার্দো দা ভিঞ্চি থেকে ১৪৮৮ সালে। অটো লিলিয়ানথাল, জন স্ট্রিংফেলোসহ অনেক বিজ্ঞানীই বিমান আবিষ্কার নিয়ে কাজ করেছেন। এমনকি ভারতে শিবকর তলপড়ে নামক একজন বিজ্ঞানী ১৮৯৫ সালে মানুষ (যাত্রী) বিহীন বিমান প্রায় ১৮ মিনিট ওড়ান। পরবর্তীতে অর্থাভাবে তিনি গবেষণার সফলতা আনতে পারেন নাই। বিমান আবিষ্কারের সফলতা আসে রাইট ভ্রাতৃদ্বয়ের হাত ধরে। রাইট ভ্রাতৃদ্বয় (উইলবার রাইট এবং অরভিল রাইট) প্রথম ১৮৯৯ সালে ঘুড়িতে পাখা লাগিয়ে উড়াতে চেষ্টা করেন। পরের বছর তাঁরা আর একটি উড্ডয়ন ঘটান যা  মাত্র ১২ সেকেন্ড স্থায়ী হয়। অ্যামেরিকার সেনাবাহিনী ও ফ্রান্স সরকারের অর্থ সহযোগিতা নিয়ে ১৭ ডিসেম্বর ১৯০৩ সালে Wright Flyer-এ ৬ কিলোমিটার ভ্রমন করেন।  অব্যাহত চেষ্টার ফলে ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে তৈরিকৃত Flyer-111-এ ১০৫ বার উড্ডয়ন করেন। অরভিল যুক্তরাষ্ট্রে ১৯০৮-এর  ৯ সেপ্টেম্বর সফলভাবে বিমানের একাকী এক ঘণ্টা ২ মিনিট ১৫ সেকেন্ড একটানা ভ্রমণ করেন। ১৭ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট টমাস সেলফ্রিজকে সঙ্গী করে ওড়ার সময় একশ ফুট ওপরে প্রোপেলার ফেটে গেলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাটিতে আছড়ে পড়েন। সেলফ্রিজের মৃত্যু হলেও অরভিল বেঁচে যান। এটিই বিমান দুর্ঘটনায় প্রথম মৃত্যু। অব্যাহত গবেষণার ফলে প্রথম বাণিজ্যিক বিমান চালু হয় ১৯১৪ সালের ১লা জানুয়ারী। এই উদাহরণেও আমরা দেখতে পাচ্ছি সময়ের চেয়ে কাজটিই মুখ্য হয়ে উঠছে। কোন বিজ্ঞানীই চেষ্টা করেন নাই নির্দিষ্ট সময়েই কাজ শেষ করতে। তাঁরা কাজ শুরু করেছেন গুরুত্ব বুঝে আর ভেবেছেন নিজে সফল না  হলে পরবর্তী কোন না কোন প্রজন্ম সফল হবে।

মহাভারতের দিকে তাকালেও দেখতে পাই অর্জুন শ্রেষ্ঠ ধনুর্বীর হওয়ার জন্য  সূর্যাস্তের পরও ধনুর্বিদ্যা অনুশীলন করছেন। একই রকম কাজের প্রতি ভালোবাসা আর কাজের প্রতি নিবেদন দেখতে পাই কর্ণের ক্ষেত্রেও। গুরু দ্রোণের সরাসরি শিক্ষা না পেয়েও একলব্যের বিদ্যার প্রতি একনিষ্ঠ সমর্পণ তাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়েছিল । সুতরাং কেউই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে চান নাই বরং শুধুই কাজের মুল্য বুঝে সময়, মেধা, শ্রম সমর্পণ করেছেন এবং কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন করতে পেরেছেন।   

 

আমরা বঙ্গবন্ধুর প্রসঙ্গ  আনতে পারি। ১৭৫৭ সালে বাঙ্গালির স্বাধীনতা অস্তমিত হওয়ার পর থেকে স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারে অনেক মহান নেতা কাজ করেছেন। সেই মিছিলে বঙ্গবন্ধুও যুক্ত হন মাত্র ১৪ বছর বয়সে ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে। ১৯৩৪ সালে রাজনীতি শুরু করে দীর্ঘ সময় ক্ষমতার বাইরে থেকে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার মাধ্যমে প্রথম ক্ষমতার কাছাকাছি আসেন। যদিও এই মহান নেতা ক্ষমতাকে দায়িত্ব হিসেবেই জানতেন। বাংলা ও বাঙ্গালির মুক্তি ব্যাতিত অন্য কোন ইচ্ছে থাকলে তিনি জেলের ঘানি টেনে এত দীর্ঘ সময় রাজনীতি করতেন না। বঙ্গবন্ধুর কাছে বাংলা ও বাঙ্গালির মুক্তি ছিল একমাত্র ধ্যান ও জ্ঞান। সেজন্যই বছরের পর বছর সময় ব্যায় করেছেন অভীষ্ট লক্ষে পৌঁছাতে। জনসচেতনা থেকে শুরু করে নানাবিধ কর্মসূচির মাধ্যমে তিনি একটু একটু করে তার সুনির্ধারিত কাজকে সার্থক করেছেন। আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি।  বঙ্গবন্ধুও সময়ের চেয়ে কাজের মূল্যটাই বুঝলেন সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে। একই ভাবে পৃথিবীর ভাল/বড় কাজ, আবিষ্কার, বিভিন্ন দেশের স্বাধীনতার দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই সময় সেখানে অনেকটাই অগুরুত্বপূর্ণ। এমনকি খারাপ কাজের দিকে তাকালেও একই চিত্র চোখে পড়বে। কেউ যদি দক্ষ চোর হতে চায় তাকেও চুরি করাটাকেই সর্বোচ্চ ভালবাসতে হবে।  

তাহলে কি সময়ের কোন মূল্য নাই? আছে। অবশ্যই আছে। একটা কাজ করতে অনেক গুলো উপাদান (Raw material) লাগে যেমন সময়, মেধা, শ্রম, অর্থ ইত্যাদি। আমরা কোন উপাদানকেই অপচয় করতে পারিনা। এখানে সবগুলোই মূল্যবান উপাদান হিসেবে পূজিত। কাজের সঠিক মূল্য বুঝতে পারলে উপাদান সমূহ (সময়, মেধা,  শ্রম, অর্থ) বিনিয়োগ সহজ হয় এবং সর্বোত্তম ব্যাবহার নিশ্চিত করতে মনোনিবেশ করা যায়। কাজের গুরুত্ব না বুঝে মানুষ যখন শুধুই সময়ের মূল্য নিয়ে ভাবে তখন তার চঞ্চল মন গুরুত্বপূর্ণ কাজকেই অগুরুত্বপূর্ণ করে তোলে। যেমন কোন ছাত্রকে একটা তুলনা মূলক কঠিন বিষয় অধ্যয়ন করতে হলেই বলে অযাথা সময় নষ্ট হচ্ছে অথচ সেটা গুরুত্বপূর্ণ। পৃথিবীর সকল মানুষ যদি অন্তত একটা করে ভাল কাজ করত তাহলে পৃথিবী আরও সুন্দর হতো অথচ সময়ের মূল্যর প্রতি সবারই কম বেশি নজর ছিল এবং জীবনকালে প্রত্যেকটা মানুষই অন্তত কয়েক হাজার বার “সময় নষ্ট হচ্ছে” এই কথাটা উচ্চারণ করে। তাহলে কি “সময় নষ্ট হচ্ছে” বলা যাবে না? আলবাত যাবে। কিন্তু একটা কাজের উপাদান হিসেবে সময় নষ্ট হচ্ছে এই উপলব্ধিটুকু থাকতে হবে। আমরা সময়ের মূল্য দিতে চাইলেও কিভাবে দিতে হবে এবং কোন অনুসঙ্গে দিতে হবে বা সময়ের মূল্য বলতে আসলেই কি বোঝায় সেটা বুঝিনা। “সময় নষ্ট হচ্ছে” অথবা “সময়ের মূল্য নাই” এই কথা বলা প্রবন্ধের উদ্দেশ্য নয়। প্রবন্ধের উদ্দেশ্য কাজের সাথে সময়কে সম্পর্কিত করে, কাজের মূল্যায়নের মাধ্যমে সময়কে মূল্যবান ও শক্তিশালী করা। সময়কে নিরঙ্কুস (Absolute) মূল্যবান না ভেবে কাজকে নিরঙ্কুস (Absolute) মূল্যবানের স্থানে বসিয়ে সময়কে কাজের অন্যতম উপাদান হিসেবে অন্য সকল উপাদানের মতই সর্বোচ্চ যত্ন করতে হবে।

 

মোঃ মেনহাজুল আবেদীন

সহকারী অধ্যাপক,

পরিসংখ্যান ডিসিপ্লিন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।

পিএইচডি গবেষক

হোক্কাইদো বিশ্ববিদ্যালয়, জাপান।

বিডাকঃ menhaz@ku.ac.bd 

 

তারিখঃ ১৮ জুলাই, ২০২০

·       Email শব্দটা Electronic mail এসেছে, শুরুতে E-mail লেখা হতো। Electronic অর্থ বিদ্যুতিন-সংক্রান্ত বা বৈদ্যুতিন। এখানে Email কে বিডাক বলা হচ্ছে। আমার আগে কেউ ব্যাবহার করছে কিনা জানা নাই।  আমার ইচ্ছে এটা প্রচলিত হোক। 

 

 

 

Thursday, May 6, 2021

মাওলানা শব্দ নিয়ে কিছু কথা

বিজ্ঞান, ধর্ম, গণিত বা অন্য যেকোন বিষয়ে ভালোমত জ্ঞান অর্জন করতে হলে যে ভাষা চর্চা করা বা ভাষা ভালো ভাবে শেখা জরুরী সেটা আমরা বুঝতে আগ্রহী নই| ভাষার অপব্যবহার একটা জাতিকে কোথায় নামাতে পারে সেটা পরিষ্কার ভাবে বুঝতেও নারাজ আমরা| গত কয়েকদিন ফেসবুকে দেখছি জনৈক ভদ্রলোক মাওলানা শব্দটিকে ব্যাখা করছেন এভাবেমাওলা + আনা = আল্লাহ + আমাদের = আমাদের আল্লাহলেখক বোঝাচ্ছেন যিনি মাওলানা তিনিই আমাদের আল্লাহ| যদিও শব্দটি  (مولا+ نا) মাওলার সাথে না সংযোগে গঠিত। আরবিতে না (نا) দিয়ে আমাদের বোঝায়। ভদ্রলেখক এই শব্দের প্রচলনে অনেক ষড়যন্ত্রের গন্ধ আবিষ্কার করেছেন| ইহুদি নাছারাদের তুলধুনো করে ক্লান্ত হয়েছেন। উপমহাদেশে আলিয়া মাদ্রাসা প্রতীষ্ঠার ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব আবিষ্কার করেছেন। বিভ্রান্তির দূর্গন্ধ যুক্ত লেখাটা শেয়ারও হয়েছে অনেক| এখন দেখা যাক, মাওলানা বলতে কি বোঝায়। আমি কয়েকটা উদাহরণ পেশ করব। ধরা যাক, কেউ বললেন " একজন আল্লাহওয়ালা মানুষ"| তাহলে কি এই বাক্য দিয়ে ক-কে আল্লাহর মালিক বুঝাবে? নিশ্চয় বোঝাবে না। বরং ক ব্যক্তিটি একজন আল্লাহ প্রেমী বা ধার্মিক বোঝাবে। যদিও ওয়ালা যুক্ত শব্দ গুলো দিয়ে মালিকানা বোঝায়। যেমন, বাড়িওয়ালা, গাড়িওয়ালা, ফেরিওয়ালা, টাকাওয়ালা, ইত্যাদি দ্বারা যথাক্রমে বাড়ি, গাড়ি, ফেরি ও টাকার মালিক বোঝায়| আবার মসজিদে হারাম দিয়ে মসজিদটি খারাপ যায়গা বুঝায় না বরং ওই এলাকায় হাঙ্গামা বা যুদ্ধ করা হারাম বা নিষিদ্ধ বোঝায় অর্থাৎ হারাম শব্দটি দিয়ে মসজিদের পবিত্রতা বোঝাচ্ছে।  

সময়ের সাথে সাথে শব্দ নতুন অর্থ ধারণ করে বা করতে পারে| আমাদের দেখতে হবে বাংলা অভিধান এই শব্দটাকে কিভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে|বাংলা অভিধান শব্দটিকে আরবি উৎসের বাংলা শব্দ হিসেবে ভুক্তি করেছে এবং যার অর্থ ইসলাম ধর্ম বিষয়ে পন্ডিত নির্ধারণ করেছে|বাংলা উইকিপিডিয়ার মতে মাওলানা (مولانا) একটি সম্মানসূচক উপাধি যা মুসলিম ধর্মীয় নেতার নামের শুরুতে যুক্ত করা। মূলত মধ্য এশিয়া ভারত উপমহাদেশে মাদ্রাসা বা দারুল উলুম বা কোনো ইসলামি পন্ডিতের অধীনে পড়াশোনা করা স্নাতকোত্তর পাশ ব্যক্তিকে সম্বোধনের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।মাওলা শব্দটির অন্তত ৩০ টি অর্থ আছে। যেমন,  প্রভূ, বন্ধু, সাহায্যকারী, মনিব, চাচাতো ভাই, প্রতিনিধি, নেতা, গুরু ইত্যদি। বাংলাভাষায় নানান উৎস থেকে শব্দ এসেছে আবার সেসব শব্দ মূলভাষার থেকে অনেকটা আলাদা অর্থও ধারন করেছে যেমন, ইংরেজিতে  Affair (a sexual relationship between two people, one or both of whom are married to someone else) দ্বারা পরকিয়া বুঝালেও আমাদের দেশ বা সংস্কৃতিতে আমরা অন্যভাবে ব্যবহার করি | শব্দের অর্থ যতটা তার উৎসের উপর নির্ভর করে তার চেয়ে অনেক বেশি করে তার প্রচলিত সংজ্ঞা উপর অথবা বিশেষ এলাকায় কিভাবে শব্দটিকে গ্রহন করা হয়েছে তার উপর| এমন কি নির্ধারিত সংজ্ঞা থাকার পরও ব্যক্তিক পর্যায়ে ভিন্ন অর্থ ধারন করতে পারে আর সে জন্যই আমরা মাঝে মাঝেই এরকম বাক্য শুনতে পাই "এটা দ্বারা কি বোঝাতে চাচ্ছেন পরিষ্কার করে বলুন"।  পল, ক্ষণ, নিমেষ, দন্ড, মুহূর্ত এসবের আলাদা আলাদা অর্থ বা সংজ্ঞা আছে কিন্তু বর্তমানে সবগুলোই অল্প সময় অর্থে ব্যবহৃত হয়|যে ভাত দেয় সেই ভাতার (স্বামী) হলে তো অনেকেই অনেকের ভাতার কিন্তু বাস্তবে তা নয় কারণ ভাতারকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে ভিন্ন ভাবে| উত্তরের ঠান্ডা বায়ুর প্রবাহ থেকে বাঁচতে গায়ে জড়ানো কাপড়কে উত্তরীয় বলা হত কিন্তু এখন কোন অনুষ্ঠানে অতিথিদের পরিয়ে দেওয়া চাদর সদৃশ কাপড়কে উত্তরীয় বলা হয়|ভাষা কিভাবে কাজ করে, কিভাবে এক ভাষার শব্দ অন্য ভাষায় প্রবেশ করে, অর্থের পরিবর্তন কিভাবে হয় এসব জানা দরকার| ভাষা এক ধরণের অস্ত্র তাই এর সঠিক ব্যবহার জানা থাকা চাই। অনেকেই পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা অনায়াসে লিখতে পারেন, কিন্তু তিনি কি লিখছেন সে বিষয়ে খুব বেশি ধারণা রাখেন না। এমন লেখকের সংখ্যা চারপাশে তাকালে ভুরি ভুরি দেখা মেলে। প্রতিদিন ফেসবুকে দুই পৃষ্ঠা করে লিখে আমরা আবার রবীন্দ্রানাথের কাছাকাছি কিছু একটা ভেবেও বসি। মনে যা আসে তাই লিখে দেওয়া ভালো কথা নয় বরং একটু চিন্তা করে, সময় নিয়ে ভাবনায় সাবালকত্ব আনা দরকার। 

 

মেনহাজুল আবেদীন

শিক্ষক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। 

বিডাকঃ menhaz70@gmail.com 


Saturday, February 20, 2021

রূপকথা গণিত ও বিজ্ঞান শিক্ষা

রূপকথার গল্প কিভাবে আষাঢ়ে গল্প হিসেবে পরিচিতি পেল সেটা আমার জানা নাই। ধারণা করি আষাঢ়ে বৃষ্টির অলস দিনগুলিতে গ্রামের মানুষ খানকা বা টং ঘরে বসে তামাক/হুক্কা টেনে সময় পার করার পাশাপাশি এসব গল্প চর্চা করতেন। একই সাথে চলত ঘরের নানা কাজ, যেমন দড়ি বানানো, মাছ ধরার জাল বুনানো ইত্যাদি।  একই আসরে  সুর করে পুঁথি/কিতাব পড়াও চলত। নারী পুরুষ নির্বিশেষে সবাই এসব গল্পের চর্চা করতেন। যেহেতু বেশির ভাগ মানুষ গরিব/অভাবী ছিল সম্ভবত সেজন্যই রাজা-রাজড়ার গল্প বেশি হত। চরম অর্থ কষ্টে থেকে তারা ভাবতেন একদিন সুখের দিন আসবে। এসব গল্পের ভিতর দিয়ে তারা বিভিন্ন উপদেশ দেওয়ারও চেষ্টা করতেন। তারা দেখাতেন রাজপুত্রের অনেক সম্পদ থাকলেও বুদ্ধিতে কখনও কখনও গরিবের পুত্রের কাছে হেরে যায়। তারা বলার চেষ্টা করতেন মস্তিষ্ক উন্নত করার জন্য আর্থিক প্রাচুর্য থাকা উপকারী তবে আবশ্যক নয়। সেসব আসরে তারা নতুন কিছু আবিষ্কার বা স্বয়ংক্রিয় কিছু তৈরি করারও স্বপ্ন দেখতেন। হয়ত যেসব কাজ করতে অনেক পরিশ্রম আর কষ্ট করতে হতো সে সব কাজকে স্বয়ংক্রিয় করতে চাইতেন। যেমন রাজার বাড়ির সদর দরজা খুলতে যখন বেশ কয়েক জন  দ্বাররক্ষীর  প্রয়োজন, তখন তারা একটা গল্প তৈরি করলেন যেখানে কেউ বলা মাত্রই দরজা খুলে যাবে বা বলবে চিচিং ফাঁক। গল্পের চরিত্র গুলো নিমেষেই পাহাড়ে উঠতে পারত, সমুদ্র পাড়ি দিতে পারত, অন্ধকারে চলতে পারত ইত্যাদি। আমরা দেখতে পাই রূপার কাঠি ছোঁয়ালে রাজকন্যা ঘুমিয়ে পড়ত আর সোনার কাঠি ছোঁয়ালে রাজকন্যা জেগে উঠত।  

এসব গল্প নিবিষ্ট চিত্তে পাঠ করলে দারুণ সব পাঠোদ্ধার উপাদান পাওয়া  যায়। এই গল্প গুলো আমাদের ভাবতে সাহায্য করে, ভাবাতে সাহায্য করে, স্বপ্ন দেখতে সাহায্য করে। মায়ের বা দাদির কাছে ঘুমাতে ঘুমাতে যে ছোট্ট বাচ্চাটি কোমল মন নিয়ে  পাহাড়, সমুদ্র, আকাশ জয়ের গল্প শোনে, নতুন কিছু আবিষ্কারের গল্প শোনে, গল্পে গল্পে নীতি কথা শোনে সে অবশই তখন বড় হওয়ারও স্বপ্ন দেখে। এটা সত্য যে আমরা সন্তানদের পাঠোদ্ধার বা গল্পের মর্ম শেখাতে পারি না। আর এই সুযোগে কিছু আধুনিক নামধারী শিক্ষিত মানুষ রূপকথার গল্পকে গাঁজাখুরি, সেকেলে আর অরুচিকর নাম দিয়ে এর রস থেকে আমাদের সন্তানদের বঞ্চিত করছে। বুদ্ধিবৃত্তি বাড়ানোর বাণিজ্যিক প্রচারণা করে তুলে দিচ্ছি ভয়ঙ্কর ভিডিও গেম, যেখানে গুলি করা, বোমা বিস্ফোরণ, প্রতিপক্ষের শহর নষ্ট, প্রতিপক্ষের গাড়ি ভেঙ্গে ফেলা ইত্যাদিই  মূল বিষয়। ধারণা করি, একটা গেমও পাওয়া যাবে না যেখানে মানবিকতা আছে। নতুন প্রজন্মের মায়েরা এসব গল্প চর্চাও করছেন না, সন্তানদেরও শোনাচ্ছেন না। বিষয়টি আন্দাজ করেই হয়তো রবীন্দ্রানাথ ঠাকুর দক্ষিনারঞ্জন মিত্রের ঠাকুরমার ঝুলি-র ভুমিকায় লিখেছেন “ঠাকুরমার ঝুলিটির মত এত বড় স্বদেশী জিনিস আমাদের দেশে আর কি আছে? কিন্তু হায় এই মোহন ঝুলিটিও ইদানীং ম্যানচেস্টারের কল হইতে তৈরি হইয়া আসিতেছিল। এখনকার কালে বিলাতের “Fairy Tales” আমাদের ছেলেদের একমাত্র গতি হইয়া উঠিবার উপক্রম করিয়াছে। স্বদেশের দিদিমা কোম্পানি একেবারে দেউলে।”

রূপকথার গল্প একটা মানুষের ভাবালুতাকে দারুন ভাবে নাড়াতে পারে, ভাবাতে পারে, স্বাপ্নিক করে তুলতে পারে। গল্প শোনা,  বলা ও পড়ার অভ্যাস অন্যান্য বিষয় আত্মস্ত করতে সাহায্য করে। বঙ্গ সন্তানদের রূপকথার গল্পের পাঠোদ্ধার করার সামর্থ্য তৈরি হয় না বলেই তারা গণিত ও বিজ্ঞান চর্চায়ও পারঙ্গম নয়। আমি মনে করি পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় রূপকথার গল্পের বই হচ্ছে গণিতের বই, যার প্রত্যেকটা বাক্যই রূপকথা, প্রত্যেকটা গল্পই রূপকথা। ধরা যাক কিছু চলক (Variable)  X, Y বা Z, এগুলো আসলে কি? এগুলো বাস্তব জীবনের ওজন, উচ্চতা, বেগ, চাপ, তাপ, তাপমাত্রা, গভীরতা, গাড়ির সংখ্যা, মেইলের সংখ্যা, ছবির সংখ্যা, পিক্সেলের সংখ্যা, মানুষের সংখ্যা, কোষের সংখ্যা, কোষের গতি, বিমানের গতি, বাতাসের গতি, পানির গতি,  রক্তের গতি, মাছের গতি, পাখির গতি, কিট-পতজ্ঞের জীবন ধারন, ইন্টারনেটের বাফারিং সহ কত কি। ঠিক রূপকথায় যেমন কোন বিশেষ গল্প দিয়ে বিশেষ বিষয়কে রূপক ভাবে উপস্থাপন করা হয় তেমনি গণিতেও চলক দ্বারা বাস্তব জীবনের বিষয় গুলোকে প্রকাশ ও সমাধান করা হয়। বিমূর্ত গণিত (Abstract Mathematics), ফলিত গণিত (Applied Mathematics), পরিসংখ্যান (Statistics)-সহ সকল গাণিতিক বিষয়ে কল্পনা করাই মূল বিষয়। কল্পনা শক্তিকে জাগ্রত করতে না পারলে বিজ্ঞান চর্চা থমকে থাকবে। নবম -দশম শ্রেণীতে ব্রাউনীয় গতির (Brownian motion) আলোচনায় পোলেন কণার কথা বলা ছিল। এই পোলেন কণা গুলোকে যদি মানুষ, পাখি, শরীরের কোষ, মাছ, পশু, পতজ্ঞ, গ্যাসের কণা, ধূলিকণা, বিষের কণা ইত্যাদি ধরা হয় তাহলে ঐ ব্রাউনীয় গতির গণিত দিয়েই এই সকল বিষয়কে ব্যাখা করা যেতে পারে। এখানে পোলেন কণা গুলোকে রূপক ধরে নিয়ে ব্রাউনীয় গতির সমীকরণ তৈরি করা হয়েছে। মনে রাখতে হবে মাছের ঝাঁকের জন্য যে সমীকরণ হবে সেটা মানব শরীরের কোষের জন্য শতভাগ একই হবে না, কিছু পরিমার্জন পরিবর্ধন হবে। আবার স্নায়ু কোষের জন্য যে গণিত হবে সেটা সরাসরি অন্য কোষের জন্য নাও হতে পারে। পরিসংখ্যানের একটা খুব পরিচিতি উদাহরণ পয়সা টস, যেখানে হ্যাঁ  বা না (Success and failure অথবা True and False) দেখান যায়। এখানে পয়সা টস একটা রূপক ধারণা, পৃথিবীতে যে যে ধরনের ঘটনা যেগুলোতে হ্যাঁ বা না এর ধারণা আছে সে সমস্ত সমস্যাকে পয়সা টসের গণিত নিয়ে প্রকাশ ও তার সমাধান করা যেতে পারে। একই ধারণাটি বুলিয়ান বীজগণিতেরও (Boolean Algebra) মূল। বুলিয়ান বীজগণিতের বিষয়টা চমৎকার,  এই গণিতে ধরে নেওয়া হয় গণিত হবে খুব সহজ, সেখানে  হ্যাঁ বা না (Success and failure অথবা True and False) দিয়ে সবকিছুকে প্রকাশ করা হবে। বর্তমান সময়ের ডিজিটাল প্রযুক্তি এই গণিতের উপর দাঁড়িয়ে আছে। এটা আসলে গানিতিক যুক্তি বিদ্যা। স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তিগুলোকে (যেমন দরজা খোলা, আলো জ্বলা, গাড়ি চালান, ড্রোন চালনা, অস্ত্র চালনা ইত্যাদি)  গানিতিক যুক্তি বা  বুলিয়ান বীজগণিতের মাধ্যমে উদ্ভাবন করা হয়। অনেক সময় আমরা গাণিতিক ভাবে প্রমাণিত কোন বিষয়কে সত্য ধরে নেই সেটাও সবসময় ঠিক নয়। গণিত যেহেতু একটা ভাষা মাত্র তাই অন্য সকল ভাষার মতই গণিত দিয়েও মিথ্যা কথা বলা যায়। যেমন যখন বিশ্বাস করা হত সূর্য পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছে তখন সে অনুযায়ীই গণিত লেখা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে সেটা অচল। গণিত বা বিজ্ঞান চর্চার জন্য দরকার কল্পনা আর প্রকৃতিকে দেখা। মানুষ প্রকৃতিকে যত নিবিড় ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পারছে, যত ভালো ভাবে কল্পনা করতে পারছে গণিত বা বিজ্ঞান নামক ভাষাটি ততই যৌবন পাচ্ছে। সুতরাং, কিশোর বা কৈশোরে রূপকথা, যুবক বয়সে সাহিত্য পড়া উত্তম কল্পনা শক্তি বা ভাবালুতাকে সৃষ্টি করে এবং প্রকৃতিকে নিবিড় ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে সহায়তা করে যা পরবর্তীতে গণিতের পাঠোদ্ধার, আবিষ্কারের নেশায় মত্ত করে। মানবিক মানুষ আর বিজ্ঞানময় পৃথিবী গড়তে পায় নতুন মাত্রা।

মেনহাজুল আবেদীন

শিক্ষক, পরিসংখ্যান ডিসিপ্লিন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

বিডাকঃ menhaz70@gmail.com 

Sunday, September 6, 2020

শিক্ষকের প্রতিক্রিয়া ও রাষ্ট্রের নিপীড়ন

রাষ্ট্রের নিপীড়নের ভিতর দিয়েই মানুষ কথা বলবে। রাষ্ট্র নিপীড়ন করবে সেটা খুব স্বাভাবিকহ্যাঁ সেই নিপীড়নের মাত্রা বা প্রকৃতি কেমন হবে সেটা নির্ভর করে রাষ্ট্রের মানুষ গুলো কেমনআমরা যদি ইতিহাসের দিকে তাকাই তাহলে দেখব বুদ্ধিজীবিশিক্ষকরাই বেশি মার খেয়েছেনরাষ্ট্রের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি নিপীড়নের স্বীকার হয়েছেন।আমরা সক্রেটিস থেকে শুরু করে হাল আমল পর্যন্ত দেখছি সেই নাটকের মঞ্চায়নকিন্তু এই সবগুলো নাটকে আমজনতাবিবেকবান মানুষ অত্যাচারিতের পক্ষ নিয়েছেসুতরাং আমার কাছে মনে হয় রাষ্ট্রের নিপীড়ন একটি স্বাভাবিক ঘটনাসম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক/শিক্ষিকার গ্রেপ্তারের বিষয়ে এই আলোচনার অবতারণাআমি এই গ্রেপ্তারকে একটি স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে নিতে চাইআমি তাদের নিঃশর্ত মুক্তি চাই পাশাপাশি কয়েকটি প্রশ্নও করতে চাইবলতে পারেন কেনকেউ যদি নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে পরিচয় দেয় তাহলে আমি তাকে ধরে নেই তিনি সবচেয়ে শিক্ষিত মানুষ।এবং একজন শিক্ষিত মানুষের প্রতিক্রিয়া কেমন হবে সেটা আন্দাজ করা অবশ্যই সহজশিক্ষকের প্রতিক্রিয়ায় অবশ্যই রাষ্ট্র প্রতিক্রিয়া করবে সেটাও স্বাভাবিকতাহলে আমার প্রতিক্রিয়াটা কতটা সুন্দর হতে পারে সেটা নিয়ে ভাবা দরকারআমার প্রতিক্রিয়া যদি সবচেয়ে নিম্নমানের হয় তাহলে আমার চেয়ে কম শিক্ষিতদের প্রতিক্রিয়া কেমনহবেআমি নিম্নমানের প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে রাষ্ট্রের কাছে ভাল প্রতিক্রিয়া আশা করব সেটা কি বোকামি নআমার কোন কিছু লেখার আগে ভাবা দরকার পৃথিবী উল্টে গেলেও তা মুছে ফেলা হবে নাসম্মানিত শিক্ষিকদের কেউ কেউ ফেসবুকে বক্তব্য লিখে প্রতিক্রিয়ার ভয়ে মুছে ফেলছেনতার অর্থ হচ্ছে সেটা তিনি ছেলেমানুষি করছেনএবং তার প্রতিক্রিয়ায় ছাত্রলীগ বা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও ছেলেমানুষি করেছেনএকজনের ছেলেমানুষি  মুছে ফেলা সহজ আর একজনের কঠিন এই যা পার্থক্যআমরা বলি ফেসবুকে কেন মানুষ নজর দিবে বা রাষ্ট্র নজর দিবেআচ্ছা ফেসবুক কি ব্যাক্তিগত জায়গাআমি মনে করি কোন পোস্ট লিখে পোস্ট করার আগ পর্যন্ত ব্যাক্তিগত । পোস্ট হয়ে গেলে ওই কথা আর আপনার না আপনার বন্ধুদের জন্য এবং আপনার প্রফাইল যদি উম্মুক্ত (পাবলিকহয় তাহলে তো সেটা সবার পড়ার জন্যআমি তাঁদের লেখার যেমন নিন্দা জানাই তেমনি রাষ্ট্রের নিপীড়নমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেরও নিন্দা জানাই।আমাদের প্রতিক্রিয়া গুলো যেন নিপীড়িত মানুষের জন্য হয়অনিয়মের বিরুদ্ধে হয়রাষ্ট্রের অকল্যাণের বিরুদ্ধে হয়। আমার সুগঠিত প্রতিক্রিয়া যেন আমাকে জেলে নিতে রাষ্ট্রকে সাহায্য করে। যখন প্রতিক্রিয়া লিখব তখন যেন রাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়াটা আন্দাজ করতে পারি এবং এমন ভাবে লিখব যেন রাষ্ট্র তার সর্বচ্চ প্রতিক্রিয়াটা দেখাতে পারে একই সাথে পৃথিবীর সকল বিবেকবান মানুষ ও নিপীড়িত মানুষ আমার পক্ষ নেয়। এবং আমার প্রতিক্রিয়া যেন মানুষের মনে বিপ্লবের অগ্নি জালিয়ে দেয় 

 

 

মোঃ মেনহাজুল আবেদীন 

সহকারী অধ্যাপক 

পরিসংখ্যান ডিসিপ্লিনখুলনা বিশ্ববিদ্যালয় 

ও  

পিএইচডি গবেষক 

হোক্কাইদো বিশ্ববিদ্যালয়জাপান 

বৈডাকঃ menhaz@ku.ac.bd   

 

  • Email বা বৈদ্যুতিন ডাক সংক্ষেপে বৈডাক বলা হচ্ছে। আমার আগে কেউ ব্যাবহার করছে কিনা জানা নাই। আমি এখানে ব্যাবহার করলাম। আমার ইচ্ছে এটা প্রচলিত হোক। আর Email শব্দটা তো Electronic mail আসছেশুরুতে E-mail লেখা হতো। Electronic অর্থ বিদ্যুতিন-সংক্রান্ত ধরলে এটাকে বিডাকও বলা যায়।  

 

জুলাই ০৪, ২০২০ 

সময়ের মূল্য কতটা ?

  জীবনে সময়ের মূল্য নিয়ে রচনা পড়ে নাই এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। সময়ের মূল্য নিয়ে সচেতনতা সেখান থেকেই শুরু। সময়ের সঠিক ব্যাবহার আমাদের উন্নতির ...